somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ঘোষণার শর্ত" -৪

২৪ শে জুলাই, ২০১০ সকাল ১১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আস সালামু আলাইকুম!

[পূর্বের আলোচনার ধারাবাহিকতায়, যেগুলো এখানে রয়েছে:
www.somewhereinblog.net/blog/peace55/29201656
www.somewhereinblog.net/blog/peace55/29202268
www.somewhereinblog.net/blog/peace55/29203093
www.somewhereinblog.net/blog/peace55/29204215]

সপ্তম শর্ত:
শাহাদার সপ্তম শর্ত হচ্ছে এই সাক্ষ্যকে মনে প্রাণে ভালবাসা।
যে শাহাদাকে ভালোবাসবে - সে, এই শাহাদা অনুসারে সব কিছুকে [মূল্যায়ন করবে বা] ভালবাসবে, এই শাহাদার নিহিতার্থ ও করণীয়সমূহকে ভালবাসবে এবং সেই সমস্ত মানুষকেও ভালবাসবে, যারা এই শাহাদা অনুযায়ী জীবনযাপন করেন এবং এর অর্থ প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেন। এটা শাহাদার একটি পূরণীয় শর্ত। একজন মানুষ যদি শাহাদা উচ্চারণ করে, অথচ এই সাক্ষ্য যা কিছুর প্রতিনিধিত্ব করে সেসবকে ভাল না বাসে, তবে বলতে হবে যে, তার ঈমান অপূর্ণ এবং তাকে সত্যিকার বিশ্বাসী বলা যাবে না। সে যদি শাহাদা ভাল না বাসে, অথবা, যদি এর বক্তব্যের প্রতি ঘৃণা পোষণ করে, তবে বলতে হবে যে, সে শাহাদাকে অস্বীকারই করলো। পবিত্র কুর’আনে আল্লাহ্ বলেন :

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَنْدَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ وَالَّذِينَ آَمَنُوا أَشَدُّ حُبًّا لِلَّهِ

“তবু মানুষের মাঝে কেউ কেউ আল্লাহ্ ছাড়া অন্যকে আল্লাহর সমকক্ষ হিসাবে গ্রহণ করে এবং আল্লাহকে ভালবাসার মত করে তাদের ভালবাসে। কিন্তু যারা ঈমান এনেছে, তারা আল্লাহর প্রতি ভালবাসায় সুদৃঢ়….।”
(সূরা বাক্বারা, ২ : ১৬৫)

এছাড়া সূরা তওবার ২৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ্ পার্থিব ব্যাপারসমূহকে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল ও জিহাদের চেয়ে বেশি ভালবাসার ব্যাপারে সবাইকে সাবধান করেছেন:

قُلْ إِنْ كَانَ آَبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُمْ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ وَجِهَادٍ فِي سَبِيلِهِ فَتَرَبَّصُوا حَتَّى يَأْتِيَ اللَّهُ بِأَمْرِهِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ

“বল, ‘তোমাদের কাছে যদি আল্লাহ্, তাঁর রাসূল এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করা অপেক্ষা তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভ্রাতা, তোমাদের পত্নী, তোমাদের গোষ্ঠী, তোমাদের অর্জিত সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য যার মন্দা পড়ার তোমরা আশঙ্কা কর এবং তোমাদের বাসস্থান যা তোমরা ভালোবাসো – এসব বেশী প্রিয় হয়, তবে অপক্ষো কর আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত।’ আল্লাহ্ সত্যত্যাগী সম্প্রদায়কে সৎপথ প্রদর্শন করেন না।”
(সূরা তওবা, ৯:২৪)

রাসূল (সা.) বলেছেন, “যার ভিতর তিনটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে সে ঈমানের মিষ্টি স্বাদ লাভ করেছে। (যার প্রথমটি হচ্ছে) সে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে যে কারো চেয়ে বেশি ভালবাসে …………….।” (বুখারী ও মুসলিম)

অষ্টম শর্ত:
শাহাদার অষ্টম শর্ত হচ্ছে অন্য সকল উপাস্যকে অস্বীকার করা।
এটা যদিও শাহাদার কথাতেই স্পষ্ট, তবু অনেকে শাহাদা উচ্চারণ করলেও, এ ব্যাপারটা সম্বন্ধে পরিস্কার ধারণা পোষণ করেন না। সেজন্যই দেখা যায় অনেকে আল্লাহর ইবাদত করেন এবং পাশাপাশি অন্যান্য শাফায়াতকারীর শরণাপন্ন হন। শাহাদা কেবল নিশ্চয়তাকারী একটি ঘোষণা নয়, বরং অন্য উপাস্যদের অস্বীকারকারী একটি ঘোষণা, যেটা আল্লাহ্ সূরা বাকারার ২৫৬নং আয়াতে মনে করিয়ে দেন:

فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِنْ بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَى لَا انْفِصَامَ لَهَا
“…..যে তাগুতকে অস্বীকার করবে এবং আল্লাহ্য় ঈমান আনবে, সে এমন এক মজবুত হাতল ধরবে যা কখনো ভাঙ্গবে না………।”
(সূরা বাক্বারা, ২:২৫৬)

[আমাদের দেশে বিভিন্ন পীরের খানকায় বসে মানুষ একাধারে যেমন “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্” যিকির করে, তেমনি জীবিত/মৃত পীর বা দরবেশের কৃপা ভিক্ষা করতে থাকে। এসব স্পষ্টতই উপরোক্ত শর্তের পরিপন্থী কাজ।]

এছাড়া রাসূল(সা.) বলেছেন: “যে বলে যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই এবং আল্লাহ্ ছাড়া যা কিছুর উপাসনা করা হয় তা অস্বীকার করে – তার সম্পদ ও রক্ত নিরাপদ এবং তার হিসাব হবে আল্লাহর সাথে।” (মুসলিম)

ফি আমানিল্লাহ্!!

[চলবে ....... ইনশা'আল্লাহ্!]
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×